রাজনীতির এই ‘খেলা’ সাধারণ মানুষ কখনই চান না

মন্দিরা মাজি👆স্থানীয় সংবাদ•ঘাটাল:•ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেল রাজনৈতিক সংঘর্ষ। ২ মে সারা রাজ্যের ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। ভোটের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পরই রাজনৈতিক দলগুলি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। একে অপরের প্রতি হিংসা,ক্ষোভ,বিদ্বেষ দেখা দিল। যার যেখানে ক্ষমতা বেশি তারা সেখানে তাদের পেশি বল জাহির করতে শুরু করে দিল। মাশুল দিতে হল সাধারণ মানুষকে। কারোর মায়ের কোল খালি হল, কেউ বাবা-মা বা পরিজনকে হারালেন। বাড়ি ভেঙে পুড়িয়ে নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা টিভি চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে মানুষ বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ঘাটাল মহকুমাতে খুনো-খুনি না হলেও বাড়িঘর ভাঙা বা মারধর করার ঘটনা বহু ঘটেছে।
বাংলাতে একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। কথাটি সত্যিই যথার্থ। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হলে রাজাদের কিন্তু প্রাণ যায় না। প্রাণ যায় যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনা ও প্রজাদের। ঠিক তেমনি কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী, বড়-বড় নেতাদের দেখেছেন কারো ঘরবাড়ি ভাঙচুর করতে, কারও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতে বা কোনও জায়গায় বোমাবাজি করতে? তাঁরা কখনই এমন করেন না। কারণ তাঁরা জানেন আমাদের একে অপরকে পরিস্থিতি অনুযায়ী দরকার পড়তেই পারে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির নীচু তলার যে সমস্ত কর্মী-সমর্থক রয়েছেন তারাই এইভাবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেন। যার ফল ভোগ করেন সাধারণ মানুষ। যেসব নেতা মন্ত্রীদের জেতানোর জন্য আমরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করছি, তারা আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন ঠিকই কিন্তু সঠিক সময়ে পাশে থেকে কতটা সাহায্য করতে পারেন তা বলা মুশকিল। আর তাঁদের জন্য আমরা প্রতিবেশীর সাথে বা অন্যান্য মানুষের সাথে এত লড়াই করছি, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করছি। নেতা-মন্ত্রীদের কিন্তু পরস্পরের সঙ্গে ‘আন্তরিক’ সম্পর্ক রয়েছে। তাই অযথাই আমরা তাঁদের জন্য পরস্পরের সঙ্গে হানাহানি,হিংসা করছি। হঠাৎ করে আপনার কোনও বিপদ-আপদে কোনও নেতা মন্ত্রীর আগে প্রতিবেশীই পাশে এসে দাঁড়াবে। প্রতিবেশীরাই সবার আগে ছুটে আসবে সাহায্য করতে। তাই তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে কী হবে? রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে নিজের প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক নষ্ট করা উচিত নয়। রাজনৈতিক কারণে নিজেদের মধ্যে তিক্ততা তৈরি করলে আখেরে নিজেদেরই ক্ষতি হয়।
রাজনৈতিক বাতাবরণের বাইরে পরস্পরের সঙ্গে যখন আন্তরিকতার সম্পর্ক গড়ে উঠবে তখনই একটা সুন্দর সমাজ, সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা যাবে। মনীষী, স্বাধীনতা সংগ্ৰামী তাঁরাও তো আজকের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রীদের মতো দেশ গঠনের কাজে লিপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কখনই নিজেদের মধ্যে প্রতিহিংসায় লিপ্ত হননি। তাই চিন্তাধারা তাঁদের মতো করতে হবে যাঁরা আমাদের সুন্দর একটা পথ দেখিয়ে গিয়েছেন। সবার সহযোগিতাতেই একটা সুন্দর রাজ্য, সেখান থেকে সুন্দর সমাজ গঠন করা সম্ভব হবে।
কামিনী রায়ের কবিতায়, ‘সকলে আমরা সকলের তরে প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’। কবিতার এই কথাগুলি আমরাই পারবো সত্যি করে তুলতে। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব না করে যদি একে অপরের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন তাহলেই শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে উঠবে। খেলা হবে খেলা হবে রব না তুলে, সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে তাঁদের সুন্দর ভাবে বাঁচতে সাহায্য করাই শ্রেয়।


•আমাদের ফেসবুক পেজ:https://www.facebook.com/SthaniyaSambad.Ghatal/
•ইউটিউব চ্যানেল:https://www.youtube.com/SthaniyaSambad
•আমাদের সংবাদপত্রের মোবাইল অ্যাপ:https://play.google.com/store/apps/details?id=com.myghatal.eportal&hl=en
•টেলিগ্রাম চ্যানেল:https://t.me/SthaniyaSambadGhatal

মন্দিরা মাজি: •‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সাংবাদিক। ঘাটাল মহকুমার যেকোনও খবর আমাকে সরাসরি পাঠাতে পারেন। মো: 9933998177/ 9732738015