দেবকে ঘাটাল কলেজের সভাপতি করা নিয়ে আবারও জটিলতা তৈরি হতে চলেছে

তৃপ্তি পাল কর্মকার, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারীকে(দেব) ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে তৃণমূলের একাংশই চাইছেন না। ফলে দেবকে আটকানোর বিষয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে নানান প্রক্রিয়া।   তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে দলেরই একাংশ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘তথ্য জানার অধিকার’(আরটিআই) আইনে আবেদন করেছেন। তৃণমূলের এক গোষ্ঠী ওই উত্তর পাওয়ার পরই আদালতের শরণাপন্ন হবে বলে জানা গিয়েছে।
যাঁরা দেবকে ঘাটাল কলেজে চাইছেন না  তাঁদের প্রশ্ন, কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য হতে গেলে

ন্যূনতম স্নাতক হতে হয়। কিন্তু দেব মাধ্যমিকের পর ইঞ্জিনিয়ারিঙে ডিপ্লোমা করেছেন[ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার টেকনোলজি, জহরলাল নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, ভারতীয় বিদ্যাপীঠ, ২০০৩সালে পাশ করেছেন •বিস্তারিত দেখতে এখানে 👆 ক্লিক করে পিডিএফ ফাইলটির ২১ নম্বর পাতাটি দেখতে পারেন]। ডিপ্লোমা ডিগ্রি কখনই স্নাতক নয়। ঘাটাল আদালতের দুই আইনজীবী দয়াময় চক্রবর্তী এবং প্রশান্ত সী এনিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আরটিআইয়ের মাধ্যমে দেবের শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে চেয়েছেন। ওই দুই ব্যক্তি পেশায় আইনজীবী হলেও দুজনেই তৃণমূল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দয়াময়বাবু দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে

রয়েছেন। সেই সঙ্গে তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের পদও সামলাচ্ছেন। যদিও দয়াময়বাবু বলেন, আমি তৃণমূলের ব্যানারে আমি দেবের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করিনি। আমি একজন নাগরিক এবং আইনজীবী হিসেবে করেছি।
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আরটিআইয়ের আবেদনের উত্তর পেলেই এনিয়ে তৃণমূল আদালতে যাবে এবং দেব যাতে কলেজের সভাপতি পদে না আসতে পারেন  তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে দলের একটি অংশ। দয়াময়বাবু এবং প্রশান্তবাবু বলেন,আরটিআইয়ের উত্তর আসার পরই যা করার করা হবে। দয়াময়বাবুর সংযোজন, মমতা ভুঁইয়া স্নাতক নন বলে তাঁকে নাড়াজোল কলেজের সভাপতি করা হল না। শ্যামপদ পাত্রকে ঘাটাল কলেজ থেকে সরে যেতে হয়েছিল তিনি স্নাতক নন বলে। তাহলে দেব কোনও আইনের বলে ঘাটাল কলেজের সভাপতি হতে পারেন?
সত্যিই যদি বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় তাহলে ঘাটালের নতুন অধ্যক্ষ যোগদানের বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঝুলে থাকবে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
দেব ঘাটাল কলেজের সভাপতি হওয়ায় যাঁরা কিছু দিন আগে পর্যন্ত খুশি হয়েছিলেন তাঁরাও এখন হতাশ। তাঁদের হতাশার কারণ,প্রায় এক মাস আগে ঘাটাল কলেজের সভাপতি হিসেবে দেবের নাম পাঠানো হয়েছিল। বিগত এক মাসে দেব ‘সময় করে’ কলেজের মিটিং ডেকে দায়িত্ব বুঝে নিতে পারেননি।কলেজের সভাপতির দায়িত্ব না নেওয়ার ফলে ঝুলে রয়েছে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টিও। তাই হতাশ ঘাটাল মহকুমাবাসীর প্রশ্ন, যিনি সভাপতির দায়িত্ব নিতে এক মাসের বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছেন তিনি ঘাটাল কলেজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে কতটা সময় দিতে পারবেন? কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে তো তাঁর উপস্থিতি আশা করাই যাবে না। তাহলে এই ধরনের সভাপতি কলেজের ‘হাতির দাঁত’ ছাড়া আর কিছুই হবে না।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!