আদিবাসী দুই বোনের পড়া চালিয়ে যাওয়ার অর্থ সাহায্য করলেন এসডিও

সুদীপ্ত শেঠ: পেটের খিদে আর চরম দারিদ্রতা দমাতে পারেনি মনের অদম্য ইচ্ছাকে। আর সেই স্বপ্নকে মূর্ত করতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল। ঘাটাল ব্লকের পান্না গ্রামের আদিবাসী ‘হো’ সম্প্রদায়ের দুই বোন রিনা নায়েক আর বিনা নায়েকের হাতে আজ ২২ জুন মহকুমা শাসক নিজের বেতনের টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে দিলেন। শুধু তাই নয় ঘাটাল শহরের এক ব্যবসায়ী সঞ্জয় ঘোষকে অনুরোধ করে ওই দুই বোনের নামে আরও ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। মহকুমা শাসকের এই মানবিকতা দেখে আপ্লুত রিনা।
মহকুমা শাসক উচ্চকাঙ্ক্ষী এই দুই বোনের সন্ধান পেয়েছিলেন করোনার লকডাউনের প্রথম ফেজের সময়। মহকুমা শাসক বলেন, তখনই বুঝতে পারি ওদের খুব সংগ্রাম করে পড়তে হচ্ছে। তাই ওদের পড়ার খরচ চালিয়ে যাবার জন্য নিজের টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। সেই সঙ্গে ঘাটাল শহরের কোন্নগরের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী সঞ্জয় ঘোষকে অনুরোধ করেছিলাম। তিনিও দুই বোনকে মোট ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। সাংসদ দেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনিও ওদের একটি ল্যাপটপ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ঘাটালের পান্নার মতো প্রত্যন্ত গ্রামে দুই বোন এবং মা-বাবাকে নিয়ে চার জনের সংসার। বাবা দিন মজুরি করে সংসার চালান। আর তার ওপর ভিত্তি করেই দুই মেয়ে আজ স্নাতক স্তর অবধি পড়াশোনা করেছে। বড় বোন রিনা ইংরেজি নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছেন। আগামী দিনে ডব্লু বিসিএস অফিসার হওয়ার ইচ্ছে দুই বোনের। মহকুমা শাসকের অফিসের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অর্জুন পালের অধীনে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করবে দুই বোন। আজ অজুর্নবাবুও রিনার সঙ্গে কথা বলে উৎসাহ দেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিসিএস পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এই ভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসবেন সেটা ভাবতে পারেননি রিনা। অজুর্নবাবু বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামের এই দুই আদিবাসী মেয়ের বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা পাবার স্বপ্ন এখন হয়তো শুধু তাদের নয়, এই স্বপ্ন এখন সমগ্র ঘাটাল মহকুমা শাসক অফিসের।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!