সব্জি বিক্রেতার জীবনের বিশেষ কাহিনীই দিদি নম্বর ওয়ান-এ স্থান করে দিল

অরুণাভ বেরা: ভোর ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবজি বিক্রির হাড় ভাঙা খাটুনি। শ্বশুর ও স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের হাল শক্ত হাতে ধরে অর্থ উপার্জন, ছেলে ও মেয়েকে মানুষ করার লড়াইয়ের কাহিনী। সাফল্যের রাস্তাটা মোটেই মসৃণ ছিল না মানসী কর্মকারের। শ্রম আর জেদে ব্যক্তি জীবনে সাফল্য পেয়েছেন। সম্প্রতি টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান দিদি নম্বর ওয়ানে সুযোগ পেয়ে সাফল্য পেলেন মানসীদেবী।
ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে এই অনুষ্ঠানের অডিশনে এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে মানসীদেবীকে তাঁর জীবনের কাহিনী কথা বলতে বলা হয়। তারপরই অডিশনের লাইনে তিন হাজার আটশ ছিয়াশি নম্বরে থাকা মানসীদেবীকে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে রাজারহাটে স্টুডিওতে ডাকা হয়। ওই এপিসোডে মানসীদেবী স্কোর করেন ৮৫। দিদি নাম্বার ওয়ান হয়ে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করায় মানসীদেবী বলেন, এই অনুষ্ঠানে যেতে পারলে সবারই ভালো লাগার কথা, স্বাভাবিকভাবে আমারও ভালো লাগছে।

মানসীদেবী তাঁর জীবনের ঘাত প্রতিঘাতের কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ঘাটাল বসন্তকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে বিয়ে হয়। বাপের বাড়ি হরিসিংপুরে। বছর দশেক আগে শ্বশুরমশাইয়ের মৃত্যুর পর আর্থিক টানাটানি শুরু হয়। আড়াই বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার চালানোর জন্য বাজারে সবজি বিক্রি শুরু করেন মানসীদেবী। এখন শাশুড়ি, জা এবং জায়ের সন্তানদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

ছেলে শুভদীপ যাদবপুরে মাল্টিমিডিয়া নিয়ে পড়াশুনা করে। মেয়ে মৌমিতাকে এম.এ, বিএড পড়িয়েছেন। মানসীদেবী বলেন, জীবনে লড়াই করেই বেঁচে থাকতে হবে। যতদিন হাত পা সচল থাকবে ততদিন কাজ করে যাবেন বলে তিনি জানান। শ্যুটিঙের সময় টেনশন হচ্ছিল নাকি জিজ্ঞেস করায় তিনি জানান, ছোটবেলায় স্কুলের সব খেলায় জিতে ফিরতাম। হারিনি কখনও। সুতরাং এখানেও কোনও টেনশন করিনি। আত্মবিশ্বাস ছিল।

দিদি নম্বর ওয়ানের সেটে মানসীদেবীকে একটি বড় আটার মণ্ড দিয়ে পেল্লাই সাইজের একটি রুটি বানাতে বলা হয়। তিনি মাত্র ৪৫ সেকেণ্ডে নিখুঁত সুন্দর একটি ঢাউস রুটি বানিয়ে দেন। যা দেখে অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে বলেন, রুটির দোকান করলেও ভালই চলবে। এভাবেই দ্রুততার সঙ্গে সুন্দর নিখুঁত কাজ করেন মানসীদেবী।

সবাই আমাদের দপ্তরে যোগাযোগ করেননি। তবুও যেটুকু জানা গিয়েছে ঘাটালে অডিশন দেওয়ার পর যাঁদের ‘দিদি নম্বর ওয়ান’এ শ্যুটিং হয়ে গেছে বা টেলিকাস্ট হয়ে গিয়েছে তাঁরা হলেন— •দিপালী সামন্ত ও সরোজ সামন্ত (কুশপাতার সবিতা নার্সিং হোমের মালকিন), •রুমা দাস(কোন্নগরের বাসিন্দা রুমাদেবী গম্ভীরনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা), •প্রতিভা প্রামাণিক ও সায়ন প্রামাণিক(গম্ভীরনগরে বাড়ি, ঘাটালের নিউ প্রামাণিক জুয়েলার্সের মালকিন), •অঙ্কনা দে (সঙ্গীত শিল্পী কুহু দে বিদের মেয়ে, দাসপুর-১ ব্লকের ফকির বাজারে বাড়ি), •পুনম মাইতি(দাসপুর-২ ব্লকের কামালপুরের স্বাতী মাইতি ও প্রসেনজিৎ মাইতির মেয়ে), •আমাদের ‘স্থানীয় সংবাদ’-এর ইউটিউব চ্যানেলের সংবাদপাঠিকা বৈশাখী দত্ত হড়( কোন্নগরে বাড়ি, বৈশাখীদেবী ঘাটালের প্রখ্যাত বিউটিসিয়ান এবং আবৃ্ত্তিকারও বটে) •মালা মণ্ডল খান (কুশপাতায় বাড়ি। মালাদেবী শ্রীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা)।

মোবাইলে নিয়মিত খবর পড়তে এইখানে ক্লিক করুন Whatsapp

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!

‘স্থানীয় সংবাদ’ •ঘাটাল •পশ্চিম মেদিনীপুর-৭২১২১২ •ইমেল: [email protected] •হোয়াটসঅ্যাপ: 9933998177/9732738015/9932953367/ 9434243732 আমাদের এই নিউজ পোর্টালটি ছাড়াও ‘স্থানীয় সংবাদ’ নামে একটি সংবাদপত্র, MyGhatal মোবাইল অ্যাপ এবং https://www.youtube.com/SthaniyaSambad ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।