উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে জনসেবার উদ্দেশ্যে IAS পরীক্ষার প্রস্তুতি! ঘাটালে কর্মশালায় জেলাশাসকের বক্তব্যে আপ্লুত ছাত্রছাত্রীরা

সুদীপ্ত শেঠ, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: সাফল্যের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র কঠোর অধ্যাবসায় একমাত্র সাফল্যের চাবিকাঠি! মেধার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য! আর সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে সাফল্য কীভাবে আসতে পারে তার পাঠ শেখালেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক। পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকে আগামী দিনে উঠে আসবে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় কৃতি ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ এবং পরীক্ষার বিষয়ে গভীর অভিজ্ঞতা। সেই প্রশিক্ষণ নেওয়ার সামর্থ্য নেই গ্রাম বাংলার অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীর। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা একদম বিনামূল্যে করা হয়েছে। আজ ঘাটালের বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ে সিভিল সার্ভিসের কর্মশালায় উপস্থিত হয়ে সে কথা জানালেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি। আজ ৪ নভেম্বর শনিবার বিকাল ৪টায় ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই কর্মশালায়  জেলাশাসক  ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শ্রীনিবাস বিনাকেতরাও পার্টিল (IAS), অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) সুমন সৌরভ মহান্তি (IAS), তরুণ IAS অফিসার আশুতোষ কুমার, ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস প্রমুখ।

ওই কর্মশালায় প্রায় দুই শতাধিক যুবক-যুবতী উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষার বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্ন উত্তর দেন স্বয়ং জেলা শাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা৷ IAS পরীক্ষার ক্ষেত্রে সিলেবাস, তার জন্য কী ধরনের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, উত্তর লেখার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে,  তা তুলে ধরেন ২০২১ সালে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ইন্টারভিউতে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত আধিকারিক আশুতোষ কুমার। দাসপুর-২ ব্লকের এক ছাত্রী শুক্লা পাল, জেলাশাসককে প্রশ্ন করেন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত হয়েও কিভাবে এই ধরনের পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্ভব? উত্তরে জেলাশাসক জানান তিনি নিজেও উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে জনসেবার উদ্দেশ্যে আইএস পরীক্ষাকে লক্ষ্য করেছিলেন। সেই সময় তিনিও কর্মরত অবস্থাতে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। সময় ব্যবস্থাপনা করে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি অসম্ভব নয়। ইচ্ছেটাই হলো মূল শক্তি৷ এছাড়াও রাজ্য স্তরে  WBCS পরীক্ষার ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রশ্ন হয় তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন ঘাটালের মহকুমা শাসক৷

জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, আগামী দিনে প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রাথমিক প্রবেশিকা পরীক্ষার আয়োজন করা হবে৷ ওই পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের মধ্যে নম্বরের ভিত্তিতে ৫০ জনকে বেছে নিয়ে বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে ইচ্ছুক সকল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি  Whatsapp গ্রুপ তৈরি করে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে একটি গ্রুপ তৈরি করার কথাও বলেন তিনি। যাতে আগামী দিনে সর্বভারতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীরা আধিকারিক থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে পারেন।

উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু অ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে তৈরি করেছেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার। সেই সময় জেলাগুলিতেও একই ধাঁচে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল৷

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!