সঠিক নিয়মে বর্জ্য সংগ্ৰহ করলেও ডাম্পিং গ্ৰাউন্ডে একসাথেই ফেলা হচ্ছে বর্জ্যগুলি

তনুপ ঘোষ, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ পৌর বাসিন্দাদের। এমনকি ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে বর্জ্যগুলিকে ক্ষীরপাই পৌরসভার কেঠিয়া নদীর চরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
[‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
যার ফলে একদিকে নদীর জল দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে পলিথিন উড়ে গিয়ে চাষের জমির ক্ষতি করছে। পৌর প্রশাসন উদাসীন।”আমার শহর, আমার গর্ব” এই ছিল ক্ষীরপাই পৌরসভার স্লোগান। আর এই স্লোগানকে হাতিয়ার করে বাম আমলে ক্ষীরপাই পৌরসভা “ক্লিন পৌর শহর” হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। বর্তমানে সেই পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ। নাগরিকদের অভিযোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে পৌরসভা সুডার কোনও নিয়মই মানছেন না। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পৌরসভা বাড়ি বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে ঠিকই। কিন্তু সেগুলির সঠিক রূপায়ন হচ্ছে না। সঠিক যে রূপায়ন হচ্ছে না সেই ছবি আমাদের ক্যামেরায় ধরা পড়ল। ক্ষীরপাই পৌরসভা ১০টি ওয়ার্ডে পৌরকর্মীরা গাড়ি নিয়ে হুইসেল বাজিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করে। নাগরিকদের বক্তব্য আমাদের কাছ থেকে যখন পৌরকর্মীরা বর্জ্য সংগ্রহ করছে তখন আলাদা আলাদা চারটি ড্রামে রাখছে। পৌরসভা আমাদের প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে বালতি দিয়েছে। একটিতে পচনশীল বর্জ্য ফেলার জন্য বলা হয়েছে, অন্যটিতে অপচনশীল বর্জ্যগুলি রাখতে বলা হয়েছে। ক্ষতিকারক বর্জ্যগুলিকে আলাদা রাখার কথা বলা হয়েছে, সেই ভাবেই সংগ্রহ করা হয়। পৌর নাগরিকরা আক্ষেপের সাথে বলেন, ভেবেছিলাম আমরা আরও উন্নত পরিষেবা পাব। কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টো চিত্র। বাড়ি গিয়ে বর্জ্যগুলিকে আলাদা করে ভাগ করে নেওয়া হলেও পৌর ডাম্পিং গ্রাউন্ডে সেগুলিকে একসাথে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আবার ডাম্পিং গ্ৰাউন্ড থেকে বর্জ্যগুলিকে তুলে নিয়ে গিয়ে ক্ষীরপাই এর মূল প্রবেশ পথ রাজ্য সড়কের ধারে কেঠিয়া নদীর চরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই বা নদীর জল বাড়লেই বর্জ্যগুলি নদীর জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। একদিকে নদীর জল দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে পলিথিনগুলি পড়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদরা। এককথায় নাগরিকরা বলছেন, সুডার নিয়ম মেনে পৌরসভা বর্জ্যের উৎসস্থল থেকে আলাদা করে বর্জ্যগুলিকে সংগ্রহ করলেও বাস্তবে বর্জ্যগুলিকে একসাথেই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলছে। এর ফলে পরিবেশ দূষণ ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এ বিষয়ে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর পাপিয়া দাস বলেন, বর্জ্যগুলি আলাদা করে সংগ্রহ করা হচ্ছে। নাগরিকরা প্রথমটাই সচেতন ছিলেন না। এখন অনেকটাই সচেতন হয়েছে তারা আলাদা করেই বর্জ্যগুলি আমাদের দিচ্ছেন। আমরা বর্জ্যগুলিকে নিয়ে গিয়ে পচনশীল বর্জ্যগুলি থেকে সার, অপচনশীল বর্জ্যগুলি থেকে বিভিন্ন প্রোডাক্ট তৈরি করছি। এ বিষয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি, চেয়ারম্যানকে নাক কান কাটা চেয়ারম্যান বলে কটাক্ষ করেন। নদীদূষণের ব্যাপারে চেয়ারম্যান   দুর্গাশঙ্কর পানকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এটি একটি সাময়িক ব্যবস্থা। আমরা শীঘ্রই কেঠিয়া নদীর চর থেকে থেকে বর্জ্যগুলিকে তুলে সরিয়ে নেব। মূল ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পাশাপাশি বাসিন্দাদের বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে অসুবিধা হচ্ছিল বলে আমরা বর্জগুলি সরিয়ে কেঠিয়া নদীর চরে আনতে বাধ্য হয়েছি। প্রশ্ন উঠছে সুডার নিয়ম কেন মানা হচ্ছে না? কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী দূষণ বন্ধ করার চেষ্টা করছে সেখানে ক্ষীরপাই পৌর প্রশাসন কীভাবে নদী দূষণ করেন! আমরা অপেক্ষায় থাকলাম ক্ষীরপাই পৌর প্রশাসনের টনক নড়ে কিনা। স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি নিয়ম সঠিকভাবে পালন হয় কিনা।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!

'স্থানীয় সংবাদ'-এর সাংবাদিক। ক্ষীরপাই শহরে(পশ্চিম মেদিনীপুর) বাড়ি। চন্দ্রকোণা থানা এলাকার যে কোনও খবরের জন্য আমাকে কল করতে পারেন। •মো: 9153931055/9732784129/9732738015 •ইমেল: [email protected]