দেশাত্মবোধ জাগিয়ে ঘাটালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মিটিং অ্যাপ দৃষ্টি/Dristi

সৌমেন মিশ্রঃ সবেমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে ফল করোনার লকডাউনে আটকে,তবে পরীক্ষার শেষে এই লকডাউনে ঘরের এককোনে বসে এক অসামান্য অ্যাপ বানিয়ে তার ফল পেয়ে গেছে ঘাটাল রাধানগরের প্রাথমিক শিক্ষক হারাধন মোদকের ছেলে বছর ১৬ এর অর্নব।

আপের নাম দৃষ্টি ইতি মধ্যেই গুগুল প্লে স্টোরে জায়গা করে ফেলেছে এই আপ। অর্নব বলেছে,তার তৈরি অ্যাপে একসাথে ১০০ জন পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্স করতে পারবে। স্কুল কলেজে বাড়িতে বসেই ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান থেকে হাতের মুঠিফোনেই প্রশাসনিক বৈঠকও নিশ্চিতে সারা যাবে এই অ্যাপ। অর্নব আরও জানিয়েছে এই অ্যাপের ভিডিও কনফারেন্স হ্যাকিংথেকে সুরক্ষিত।

সবেমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া ছেলের এমন কীর্তিতে উৎফুল্লতা সারা ঘাটাল জুড়ে। ছেলের কীর্তিতে গর্বে বুক ভরেছে অর্নবের বাবা হারাধনবাবু ও মা মৌমিতা দেবীরও। নিজের বিধান সভা এলাকার ছেলের এমন কীর্তিতে মুগ্ধ ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইও।

আজ শুক্রবারের সাত সকালেই একগাল হাসি,এক গোছা ফুল সাথে একরাশ স্নেহ ভালোবাসা নিয়ে অর্নবকে ওর রাধানগরের বাড়িতেই শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে এসেছিলেন শঙ্করবাবু। শঙ্করবাবু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এ অ্যাপ তিনি প্রশাসনিক ভাবে রাজ্য স্তরে ব্যবহারের আর্জি তো জানাবেনই,এখন তিনি দলীয় মিটিং গুলোতেও এই অ্যাপ নির্দ্বিধায় ব্যবহার করবেন।

কতোটা সহজ ছিল এই অ্যাপ বানানো? অর্নবের তো কম্পিউটারও ছিলনা। মাত্র মাস পাঁচেক হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে বাবা অর্নবকে কম্পিউটার কিনে দিয়েছিলেন। কীভাবে শিখল সে এই অ্যাপ বানাবার কাজ? অর্নব বলে,সবটাই গুগুলের থেকে শেখা। পরীক্ষার পর রাতদিন অনলাইনে পড়াশুনা করেই প্রায় টানা ২ মাসের চেষ্টায় এই অ্যাপ সে বানাতে পেরেছে।

মা মৌমিতা দেবী জানিয়েছেন,ছোটো থেকেই ছেলের মোবাইলের প্রতি ঝোঁক। প্রথমটায় বকাবকি করলেও এখন ওর সমস্ত কাজে তাদের সায় আছে,তবে অবশ্যই পড়ার ফাঁকে। ছেলে তখন ক্লাস এইটে পড়ে। ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে চ্যানেলে মনিটাইজেশন এনে ফেলেছিল। অনেক বকাবকিতে সেই চ্যানেল অর্নব ডিলিট করেছিল।

পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক হারাধনবাবু জানিয়েছেন,যা মাইনে পান তা দিয়ে সার সংসার চালাতে হয়,ছেলে মেয়ের পড়াশুনার খরচ সাথে সংসার। অর্নবের কোনো দিনই নিজস্ব কোনো চাহিদা ছিলনা। প্রায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে অনলাইনে পড়াশুনা করত।

তিনি নিজেই অর্নবকে কথা দিয়েছিলেন মাধ্যমিক পরীক্ষা ভালোভাবে দিতে পারলে তিনি কম্পিউটার কিনে দেবেন। সেই কথা মতোই পরীক্ষা শেষে এই কম্পিউটার। কিন্তু তিনি ভাবতেই পারছেন না,এভাবে মাত্র কদিনেই অর্নব কম্পিউটারে দক্ষ হয়ে উঠবে আর এভাবে পরিবারের সাথে সারা মহকুমার নাম উজ্জ্বল করবে।

দৃষ্টি অ্যাপ লিঙ্ক- https://play.google.com/store/apps/details?id=com.arnab.dristi

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!