ঘাটালের প্রাক্তন সাংসদের জীবনাবসান

দেবাশিস কর্মকার: ঘাটাল লোকসভার সিপিআই-এর এই প্রাক্তন সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্তের জীবনাবসান হল আজ ৩১ অক্টোবর। ঘাটালের রাজনীতির আঙিনায় গুরুদাস দাশগুপ্ত একটি উল্লেখযোগ্য নাম। ২০০৯ এর ১৫ তম লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভার অপ্রতিদ্বন্দ্বী মুখ হয়ে উঠেছিলেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ। দীর্ঘ রোগভোগের পর আজ বৃহস্পতিবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।  নিউটাউনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সকাল ছটা নাগাদ জীবনাবসান হল তাঁর। তাঁর মৃত্যুকালীন বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের জীবনাবসানে শোকার্ত সমগ্র রাজনৈতিকমহল। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় প্রায়ত এই সিপিআই নেতার। তারপর ধীরে ধীরে বৃহত্তর রাজনীতির পথে পা বাড়ান তিনি। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ সালে সিপিআই-এর শ্রমিক সংগঠন এআইটিআইসির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন। প্রসঙ্গত ২০০৪ সালে ১৪ তম লোকসভায় পাঁশকুড়া থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দারিদ্র শ্রেণীর মানুষদের নেতা হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন সেই সময়। জনগণের কর্মী হিসেবে তাঁর তৈরি ইমেজ অচিরেই তাঁকে পরবর্তী লোকসভায় একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রূপে প্রতিষ্ঠিত করে। যার সুফল মেলে ২০০৯ এর লোকসভা নির্বাচনে। ঘাটাল লোকসভা থেকে দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে পাঁচবারের সাংসদ নির্বাচিন হন এই বর্ষীয়ান সিপিআই নেতা। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা ১৭ বছর এআইটিইউসির শীর্ষ পদে থাকেন তিনি। কিন্তু বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার জন্য সংগঠনের শীর্ষ পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। দীর্ঘদিন থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা এবং হৃদযন্ত্রের রোগে ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে  কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেই সময় জানা যায় মাইল্ড স্ট্রোকের শিকার তিনি। মাঝখানে তাঁর শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেও পরবর্তীকালে তাঁর স্বাস্থ্য আরও ভেঙে পড়তে থাকে। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের প্রয়াণে বিভিন্ন স্তর থেকে শোকবার্তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে।  তাঁর প্রয়াণে তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন দেশ ও রাজ্যের উচ্চস্তরের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে নানা স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। উল্লেখ্য, গুরুদাস দাশগুপ্তের জন্ম ১৯৩৬ সালে বাংলাদেশের বরিশালে। বাবার নাম ছিল দুর্গাপ্রসন্ন দাশগুপ্ত এবং মায়ের নাম ছিল নীহার দেবী। ১৯৬৫ সালে জয়শ্রী দাশগুপ্তের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!