নেতাদের মদতেই ঘাটালে ওভার লোডেড গাড়ি চলে, চালকরা জানালেন

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন রাস্তায় লাইন ধরে এতো ওভারলোড গাড়ি কীভাবে চলছে সেই তথ্য জানতে রাস্তায় স্থানীয় সংবাদের পক্ষ থেকে রাস্তায় নামা হয়েছিল। স্থানীয় সংবাদের ইউটিউবের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে নানান তথ্যচিত্র। দেখা গেছে ১৬ টনের রাস্তায় চলছে ৭৬ টনের লরি, ডাম্পার। লরির ডালা থেকে উপচে পড়ছে স্টোনচিপস্। প্রথম দুটি ওভারলোড ডাম্পারকে দাঁড় করিয়ে চালককে প্রশ্ন করতেই আমাদের হাতে এল নানান তথ্য। তারপরেই প্রায় দু’ঘন্টা রাস্তায় আর ওভারলোড গাড়ি চলতে দেখতে পাইনি আমরা। পরে জানা যায়, নির্দিষ্ট চেনেই চলে এইসব গাড়ি, বিপদে পড়লেই পেছনের গাড়ির চালকের কাছে ফোনে খবর চলে যায় বিভিন্ন সূত্র মারফত। চালককে প্রশ্ন করে আমরা জানতে পারি সুকৌশলেই চলে ওভারলোড গাড়ির অবাধ চলাচল। চালকের সাফাই, সবই জানে মালিক। তাদেরকে শুধু নির্দেশ দেওয়া হয় কোন রাস্তা ধরে কোথায় যেতে হবে। এক চালক জানালেন, উপর থেকেই ওভারলোড গাড়ি অবাধে চলার সব ব্যবস্থা করা থাকে। সেজন্যই প্রশাসনের কর্তারা চোখ বন্ধ করে রাখে। অনেক সময় চালকদের হাতে মাসিক পাস ধরিয়ে দেয় মালিক। পুলিশ প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিক রাস্তায় আটক করলে ওই পাস দেখাতে হয়। ওই পাস হাতে থাকলেই ‘সাতখুন’ মাফ। আরও জানা যায়, রাজনৈতিক লবিতে সরাসরি রাজ্য এবং জেলাস্তর থেকে ইস্যু হয় ওই বিশেষ পাস। তাই একটার পর একটা থানা পার হয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলা হয়ে অবাধেই যেতে পারে তারা। অবাধ চলাচলের ক্ষেত্রে গাড়ি মালিকদের উপর হাত রয়েছে তাবড় নেতাদের। তাই কোথাও ওভারলোড গাড়ি পুলিশ আটকালে সেই গাড়িকে ছাড়াতে শাসক দলের ‘দাদারাই’ সবার আগে ফোনাফোনি শুরু করে দেন।

ঘাটালের রাস্তায় দিনের পর দিন এত ওভারলোড গাড়ি চলাচলের নিন্দায় সরব হয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন। একসুরে অনেকেই বলেছেন নেতা ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতেই অবাধে চলছে গাড়িগুলি। ঘাটালের এক ক্লাব সম্পাদক বলেন, পিচরাস্তাগুলি ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের কথা চার চাকায় ঘুরে বেড়ানো সাহেবরা বুঝবে না, ঘাটালের মানুষ এবং যুবসমাজকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে হবে।
পূর্ত দপ্তরের ঘাটাল হাইওয়ে ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার গোকুল দাস মালাকার বলেন, আমরা তো নোটিশ দিয়েছিলাম মহকুমার ব্রিজগুলি দিয়ে ২০ টনের বেশি ভারি গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। সেটা পুলিশের দেখার কথা। ঘাটাল মহকুমার পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর বলেন, আমরা অসহায়। ইচ্ছে থাকলেও কিছু করতে পারছি না।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!