ঘাটাল সহ রাজ্যের ৯১৪টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা১৮ মাস বেতন পাননি

মনসারাম কর, ‘স্থানীয় সংবাদ’ ঘাটাল:  একদিকে মাথার উপর পরিবারের বোঝা অন্যদিকে আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য, এমন অবস্থায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক-শিক্ষিকা, পিয়ন ও হিসেব রক্ষকদের মাসিক বেতন। ঘাটাল মহকুমাজুড়ে মোট ১৩টি শিশুশ্রমিক বিদ্যালয় সহ সারা রাজ্যে এই ধরনের ৯১৪টি বিদ্যালয় রয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় রয়েছে ৪২ টি বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়গুলিতে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে কারও মাসিক বেতন ৯ হাজার, কারও

৭ হাজার, কারও ৫ হাজার আবার কারও ৩ হাজার ৫০০ টাকা। কর্মীদের কোনও প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ভবিষ্যৎ সুরক্ষা সরকারিভাবে নেই। এতদিন পর্যন্ত এই অল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়েই কোনও রকমে সংসার চালাতেন তাঁরা, কিন্তু বিগত প্রায় দেড় বছর বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন এই সকল পরিবারগুলি। বিদ্যালয়ের কাজে নিযুক্ত রামজীবনপুরের মদনমোহন ভট্টাচার্য, রাধানগরের অনুপম চক্রবর্তী সহ অনেকেই জানাচ্ছেন, সারামাসে যেটুকু টাকা পেতেন সেটাও দেড় বছর বন্ধ রয়েছে, আত্মীয় পরিজনদের থেকে ধার-দেনা করে চলছে সংসার। তাঁদের অভিযোগ বেতন বন্ধ থাকা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। এই নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের চাইল্ড লেবার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের

সম্পাদক সুমিত ঘোষ জানান, অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতই চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন হয় এখানেও। করোনা কালে রাজ্য সরকারের নির্দেশে পঠন-পাঠন বন্ধ, তবে সর্বশিক্ষা মিশনের আওতায় চাল, ডাল ও আলু দেওয়া হয় প্রতি মাসেই। কিন্তু কেন বন্ধ হয়ে গেল বেতন? এর উত্তরে সুমিতবাবু বলেন, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রোজেক্ট, কয়েক দশক আগে মূলত শিশুশ্রমিকদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতেই এই প্রোজেক্ট চালু করেছিল দিল্লি সরকার। ২০২০ সালের মার্চ মাসে এই প্রোজেক্টের সময়সীমা শেষ হয়েছে। প্রোজেক্টটি চালু রাখতে হলে পুনরায় রিনিউয়াল অর্ডার বের করতে হবে দিল্লির শ্রম মন্ত্রককে। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর করোনা কালে সেই রিনিউয়াল অর্ডার আর জারি করেনি কেন্দ্র। তাই তার পর থেকে এই প্রোজেক্ট চালু রাখার জন্য টাকা বরাদ্দ করেনি কেন্দ্রের অর্থ দপ্তর। সুমিতবাবু বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি মনে করে যে, বর্তমানে শিশুশ্রমিক নেই এবং এই ধরনের বিদ্যালয়গুলির প্রয়োজন নেই তাহলে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বিদ্যালয়ের কাজের সাথে যুক্ত সকলকে অন্য বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করে তাঁদের বেতন সুনিশ্চিত করা হোক। এভাবে টালবাহানার মধ্যে দীর্ঘদিন শিক্ষক-শিক্ষিকা বা অন্যান্য কর্মীদের বেতন বন্ধ রাখার ফলে মানসিক অবসাদে ভুগছেন সকলেই।
শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ের যাবতীয় দিক দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন জেলার প্রোজেক্ট ডিরেক্টর, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন জেলায় এই পদটিও দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য, এই দায়িত্ব সামলান জেলা অফিসের কোনও পদস্থ অফিসার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা অফিস সূত্রে খবর শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সকলের মাসিক বেতন চালু রাখতে বার বার অর্থ চেয়ে পাঠানো হলেও কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক দীর্ঘদিন অর্থ বরাদ্দ করেনি তাই বেতন বন্ধ রয়েছে। দিল্লির কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের শিশু ও মহিলা বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি শিবকান্ত কুমার ফোনে জানান, সমস্ত শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়গুলি পুনর্নবীকরণ করার প্রক্রিয়া চলছে, খুব শীঘ্রই তা করা হবে, পুনর্নবীকরণ হয়ে গেলেই যাবতীয় অর্থ বরাদ্দ হয়ে যাবে। •ছবিটি প্রতীকী

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!

‘স্থানীয় সংবাদ’ •ঘাটাল •পশ্চিম মেদিনীপুর-৭২১২১২ •ইমেল: [email protected] •হোয়াটসঅ্যাপ: 9933998177/9732738015/9932953367/ 9434243732 আমাদের এই নিউজ পোর্টালটি ছাড়াও ‘স্থানীয় সংবাদ’ নামে একটি সংবাদপত্র, MyGhatal মোবাইল অ্যাপ এবং https://www.youtube.com/SthaniyaSambad ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।