বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তাদের ‘নয়া বানান’ দেখে হতাশ জেলাবাসী, ক্ষুব্ধও

তৃপ্তি পাল কর্মকার: পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যালয় পরিদর্শক সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে জেলার কয়েকটি স্কুলকে পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করেছিল। ২৯ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর শহরের মেদিনীপুর কলেজ সভাগৃহে অনুষ্ঠান করে  পুরস্কারগুলি বিদ্যালয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কার-স্মারকের পাশাপাশি একটি করে মানপত্রও দেওয়া হয়েছিল। যে মানপত্রে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত উপ-অধিকর্তা দিব্যগোপাল ঘটক, ড. অরুণাভ প্রহরাজ এবং শুভ্রকান্তি নন্দের মতো উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তির স্বাক্ষর রয়েছে। বিদ্যালয়গুলিকে দেওয়া মানপত্রে বানানের দশা দেখলে যেকোনও মানুষেরই মেজাজ বিগড়ে যাবে। কারণ, মানপত্রগুলি যদি কোনও ক্লাব বা পুজো কমিটি দিত কিম্বা  প্রশাসনের অন্য দপ্তর দিলেও বিষয়টি মেনে নেওয়া সম্ভব হত। কিন্তু উচ্চ শিক্ষিতদের নিয়ে গঠিত শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তাদের সংগঠনের দেওয়া ভুল বানানের এই মানপত্র কেউই মেনে নিতে পারছেন না। এই ভুল বানানগুলি প্রমাণ করে, কর্মকতারা দায়সারার জন্য অতি অবহেলার সঙ্গে বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মদিবস পালন করেছেন। মানপত্রে দেওয়া বিভিন্ন জায়গায় বানান রয়েছে •পন্ডিত, •অর্ন্তগত, •নির্মানে, •গুনগত, •ভীষনভাবে, •অরুনাভ  কিন্তু ওই বানানগুলি হবে •পণ্ডিত, •অন্তর্গত, •নির্মাণে, •গুণগত, •ভীষণভাবে, •অরুণাভ এই মানপত্র দেখলে মনে হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুলভাল বানানে লেখা কোনও পোস্ট পড়ছি। শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাজের এই নমুনাটি বিদ্যাসাগরকে নিয়ে বিদ্রুপ করা ছাড়া আর কি হতে পারে? এবিষয়ে দাসপুর-১ ব্লকের নন্দনপুর হাইস্কুলের বাংলার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা প্রাবন্ধিক উমাশঙ্কর নিয়োগীর সংযোজন, ‘‘সেরার  সেরা চেনা যাচ্ছে।  দুধে জল নয় জলে দুধ মেশানো  হলে এত হবেই।  (১) পণ্ডিত, (২) জন্মজয়ন্তী, (৩) অন্তর্গত, (৪) নির্মাণ,  (৫)গুণগত,  (৬)ভীষণ, (৭)দিব্যগোপাল  এবং (৮)অরুণাভ…  মহাশয়গণ,    আপনারা  সম্মাননীয়। শিক্ষা বিভাগের  রথীমহারথী ।   আপনাদের  স্বাক্ষরিত  একটি  শংসাপত্রে ছ’লাইন লেখাতে আটটি  বানান ভুল রয়ে গিয়েছে।   শংসাপত্রটি একটি  উচ্চ বিদ্যালয়ে  যথাযোগ্য  মর্যাদার সঙ্গে  সংরিক্ষতও হবে।  কাদের  উপর দায়িত্ব  ন্যস্ত  করেছিলেন  ভেবে  দেখার  অনুরোধ জানাই। — উমাশঙ্কর  নিয়োগী।   অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।’’
বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পরই ওই সংগঠন নড়েচড়ে বসেছে। সংগঠনের এক কর্মকর্তা তথা ঘাটাল পশ্চিম চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেন দে জানিয়েছেন, বানান সংশোধন করে প্রত্যেকটি স্কুলকে ফের নতুন করে মানপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!