দুঃখের সে চোখের জল বদলে গেল আনন্দ অশ্রুতে, এগিয়ে এলো কন্যাশ্রীর মেয়েরা

সৌমেন মিশ্র, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: বিধবা মহিলার দিকে এগিয়ে এল কন্যাশ্রীর মেয়েরা। শনিবারের বিকেলে দাসপুরের এই ঘটনা মনোবল বাড়ালো সব হারাদের।
[‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
অল্প বয়সেই স্বামী হারা। দাসপুরের রাজনগরের বাসিন্দা বিধবা মহিলা মঞ্জু মালের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কের রাজনগরে প্রদ্যুত সেতুর ফুটপাতের অস্থায়ী সব্জি দোকান। হঠাৎই রাতে সে দোকান থেকে সমস্ত সব্জি চুরি হওয়ায় শনিবারের সকাল থেকে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলেন মঞ্জুদেবী। স্বামী হারা মঞ্জু মালের অভিযোগ, একমাত্র ছেলেও বিয়ের পর তাঁকে ছেড়ে অন্যত্র। জীবন যুদ্ধে তিনি একা। হাতে তেমন টাকাও নেই যে তিনি আবার নতুন করে ব্যবসা শুরু করবেন। শনিবারের বার বেলা কাটিয়ে বিকেলের পড়ন্ত রোদ্দুর। নাওয়া খাওয়া নেই মঞ্জুমালের। গুঁটি কতক সব্জি নিয়ে বসে বেচাকেনাও নেই। এমন সময়ই ওই বিধবা মহিলার দিকে এগিয়ে এলো দাসপুরের হাট সরবেড়িয়া বিসি রায় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। টিফিনের টাকা সাথে কন্যাশ্রী থেকে পাওয়া অর্থ, সব মিলিয়ে মোট ৫ হাজার টাকা মঞ্জু মালের হাতে তুলে দিল কন্যাশ্রীর মেয়েরা। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক বলেন, আজ শনিবার টিফিনে ছুটি। ওরা কোনওভাবে স্থানীয় সংবাদের মাধ্যমে এই বিধবা মহিলার জীবনের যুদ্ধ সাথে তাঁর আয়ের একমাত্র উৎস সব্জি দোকানের সমস্ত সব্জি চুরি যাওয়ার কথা জানতে পারে। ছাত্রীদের বায়না তাদের টিফিন থেকে বাঁচানো কিছু টাকা সাথে কন্যাশ্রী থেকে পাওয়া টাকার কিছু টাকা তারা ওই বিধবা মহিলার হাতে তুলে দিতে চায়। সে টাকায় ওই মহিলা আবার নতুন করে ব্যবসা করবেন এটাই তাঁর ছাত্রীদের আশা। ছাত্রীদের এমন আবদার, না করতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক ও তাঁর বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জগন্নাথ মণ্ডল। হাট সরবেড়িয়া থেকে ছাত্রীদের নিয়ে টোটো করে তাঁরা পৌঁছে যান রাজনগরের সে প্রদ্যুত সেতুতে। তখনও রাস্তায় বসে কাঁদছেন মঞ্জুদেবী। ছাত্রীরা মঞ্জুদেবীর দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁর হাতে তুলে দিল নগদ ৫ হাজার টাকা। হঠাৎই এই টাকা হাতে পেয়ে মঞ্জু মাল হাতে যেন চাঁদ পেলেন। মুহূর্তে দুঃখের সে চোখের জল বদলে গেল আনন্দ অশ্রুতে।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!