যে হাতে টাকা সেই হাতেই মিষ্টি, তাই রোগজীবাণুও ছড়াচ্ছে প্রচুর

সুইটি রায়👆স্থানীয় সংবাদ•ঘাটাল:মিষ্টির সাথে বাঙালির সম্পর্ক এবং মিষ্টির প্রতি বাঙালির দুর্বলতা আবহমান কাল ধরেই চলে আসছে। এই সম্পর্ক এতটাই নিবিড় যে বিয়েবাড়ি হোক বা পুজো-পার্বন, অন্নপ্রাশন বা উপনয়ন যেকোনও অনুষ্ঠানেই বাঙালি ভোজের শেষপাত ‘মধুরেণসমাপয়েৎ’ ছাড়া ভাবতেই পারে না। কারও বাড়ি যাওয়া হোক বা কোনও সুখবর মিষ্টি ছাড়া যেন সবকিছুই বড্ড ফাঁকা ফাঁকা। আসলে বাঙালির সুখ-দুঃখ, আবেগ-ভালোবাসা সবকিছুরই প্রকাশ যেন মিষ্টির দ্বারাই। মিষ্টি কেনেন না বা মিষ্টি খান না এরকম বাঙালি দুর্লভ। মিষ্টির সাথে সম্পর্ক যেমন মধুর তেমনি এই মিষ্টি থেকেই ছড়ায় বিভিন্ন রোগজীবাণু। কারণ মিষ্টি বিক্রির সময় বেশিরভাগ সময়ই স্বাস্থ্যবিধি মানেন না দোকানদাররা। যে হাতে টাকা নেওয়া সেই হাতেই মিষ্টি দেওয়া প্রায় সমস্ত দোকানেরই রীতি। ঘাটাল মহকুমার মিষ্টির দোকানগুলিও এর বাইরে নয়। যদিও ইদানিং কিছুটা হলেও সচেতনতা বেড়েছে। ঘাটালের বেশ কয়েকটি বড়ো দোকানে তৈরি করা হয়েছে আলাদা ক্যাশ কাউন্টার ও আলাদা মিষ্টি তৈরির জায়গা। কিন্তু এতো গেলো বড়ো দোকানগুলির কথা কিন্তু ছোটোখাটো দোকানগুলোর না আছে আলাদা কাউন্টার,আর না আছে মিষ্টি তৈরির আলাদা জায়গা। একই জায়গায় গাদাগাদি করে হয় মিষ্টি তৈরি আর বিক্রি। হাত না ধুয়েই মিষ্টিতে হাত আর সেই মিষ্টিই বিক্রি করা হয় যা পুরোপুরি অস্বাস্থ্যকর। অন্যান্য রোগজীবাণু তো রয়েইছে, তবে বর্তমানে বিশ্বমহামারী করোনার এইভাবে ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই বেশি। অবশ্য এই বিষয় নিয়ে বারবার সচেতনমূলক বার্তা প্রচার করা হয়েছে সারা মহকুমা জুড়ে। কিছুদিন আগে অব্দিও বেশ কয়েকবার মহকুমার বিভিন্ন মিষ্টি দোকান পরিদর্শন করা, মিষ্টির এক্সপায়ারি ডেট সহ আরও বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফ থেকে। এবিষয়ে ফুড অ্যান্ড সেফটি অফিসার অরুণাভ দে বলেন, আমরা বেশ কয়েকবার মহকুমার বিভিন্ন মিষ্টি দোকান পরিদর্শন করেছি, চেষ্টা করেছি সচেতনতা বৃদ্ধি করার। তবে শুধু মিষ্টির দোকানই নয় মহকুমার সমস্তরকম খাবারের দোকানই যেমন হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা স্ট্রিট ফুডের দোকানগুলিও পরিদর্শন করার চেষ্টা করা হয়েছে। খাবারের মান পরীক্ষা করা ও বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এবিষয়ে আমরা অনেকখানি সফল হতে শুরু করলেও বর্তমানে করোনার ফলে কিছুটা হলেও শিথিল হয়েছে নিয়মকানুন।
তাই স্বাভাবিকভাবেই হয়তো অনেক দোকানই আর ঠিকঠাকভাবে নিয়মকানুন মানছে না। তবে যেকোনও মূহুর্তে প্রশাসন অতর্কিতে হানা দিতে পারে যে কোনও দোকানে। তবে এবিষয়ে ঘাটালের বেশিরভাগ মিষ্টি দোকানের মালিকদেরই দাবি তাঁরা যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সাথেই মিষ্টি বানানো ও বিক্রির কাজ করে থাকেন। বিশেষ করে করোনার সময় থেকে তাঁরা সমস্ত বিধিনিষেধ এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় রেখেই তাঁরা বিক্রিবাটা চালু রেখেছেন। এবিষয়ে ঘাটাল শহরের এক জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান শ্রীলক্ষী মিষ্টান্ন ভান্ডারের কর্ণধার তাপস কুমার পাল ও মানব পাল বলেন, আমরা সবদিনই টাকা পয়সা নেওয়ার জন্য আলাদা কাউন্টার রেখেছি। আমাদের দোকানের কর্মচারীরা যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সাথেই মিষ্টি দেন। এখন মহামারীর কারণে যদিও খদ্দের অনেকটাই কম তবুও আমরা যথাযথ করোনাবিধি মেনেই বিক্রিবাটা করি। ঘাটালের আরও একটি জনপ্রিয় দোকান কালিকা সুইটস এর কর্ণধার সুরজিৎ ঘোষ বলেন, বরাবরই আমরা সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মিষ্টি বিক্রি করে থাকি। ঘাটালের আরও কয়েকটি ছোটখাটো মিষ্টি দোকানের মালিকেরা বলেন, আমাদের ছোটখাটো দোকান, জায়গার সংকট রয়েছে বটে তবুও যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা মিষ্টি তৈরি ও বিক্রি করার চেষ্টা করি। আর এখন তো করোনার সমস্ত বিধি মেনেই বিক্রিবাটা হচ্ছে।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!

'স্থানীয় সংবাদ'-এর সাংবাদিক। বাড়ি ঘাটাল শহরে(কুশপাতা ১৭ নম্বর ওয়ার্ড• পশ্চিম মেদিনীপুর)। আমার শহর ঘাটালের যে কোনও খবরই অবিকৃতভাবে সকলের সামনে তুলে ধরাতেই আমার আগ্রহ। •মো: 9732738015/9933998177 •ইমেল: [email protected]