ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পালকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিতে মানুষের ঢল

মনসারাম কর: ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল বদলি হলেন। চোখের জল আর বেশ কয়েক  শ’ মানুষের পুষ্প বৃষ্টির মধ্য দিয়ে আজ ১৯ নভেম্বর ২০২০ ঘাটালের ৫৯তম মহকুমা শাসক অসীম পালকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হল। মহকুমা শাসককে বিদায়ী সংবর্ধনা জানাতে আজ দুপুরে ঘাটাল মহকুমা শাসকের কার্যালয়টি  আবেগ আপ্লুত  মানুষের ঢলে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। আজ বিকেলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আদিবাসী সম্প্রদায়-সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন এদিনের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন ধামসা মাদল নিয়ে নৃত্য সহযোগে শোভাযাত্রা সহকারে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে আসেন। পুষ্পবৃষ্টি ও ফুলের তোড়া দিয়ে বিদায়ী মহকুমা শাসককে সংবধর্না জানান।  সংবর্ধনা নেওয়ার সময় আবেগ আপ্লুত বিদায়ী মহকুমা শাসকের দুচোখে জলও গড়িয়ে আসে।  ঘাটাল মহকুমার কোনও আধিকারিককে এতো বর্ণাঢ্য ভাবে সংবর্ধনা দেওয়ার ঘটনা সম্ভবত এই প্রথম। •ভিডিও
ঘাটাল মহকুমার ৫৯ তম মহকুমা শাসক হিসেবে অসীমবাবু ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঘাটালে এসেছিলেন। আসার পর থেকেই কাজের মধ্য দিয়ে ক্রমশ সাধারণ মানুষের আপন হয়ে গিয়েছিলেন। মহকুমার বাসিন্দারা বলেন, মহকুমা শাসকের অফিসের দরজা ছিল সবার জন্য অবারিত। তিনি প্রত্যেকটি মানুষের সমস্যার কথা মন দিয়ে শুনতেন। সাধ্য মতো সমস্যার সমাধান করার জন্য উদ্যোগ নিতেন। ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দাদের জন্য অসীমবাবু তাঁর চেয়ার এবং চেয়ারের বাইরে থেকে বহু কাজ করেছেন। বহু মানুষ ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হয়েছেন। মূলত তাঁর উদ্যোগেই  ইংরেজ আমলের মহকুমা শাসকের পুরানো ভবনটি জরাজীর্ণ ভবনটি ‘নতুন জীবন’ পেয়েছে। তথা নবরূপে সজ্জিত হতে পেরেছে। সোজা পথে প্রশাসন চালানোর ফলে তাঁর কাজ যে সবার ভালোলেগেছে তা কিন্তু নয়। অঙ্গনওয়াড়িদের নিয়োগ থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি কাজ স্বচ্ছ ভাবে করতে গিয়ে শাসক  দলের স্থানীয় প্রতিনিধিদের রোষেও পড়তে হয়েছে। অসীমবাবুর বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ গিয়েছে বিভিন্ন স্তরে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং শাসক দলের রাজ্য নেতৃত্বের অসীমবাবুর কাজের প্রতি পূর্ণ আস্থা থাকায় তাঁকে সেভাবে সমস্যায় পড়তে হয়নি।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্যও প্রচুর কাজ করেছেন। বিগত ন’বছরে আদিবাসীদের যেখানে মোট দেড় হাজার জাতিগত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল অসীমবাবুর আমলে কয়েক মাসে ২২৪৮টি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে বিদায়ী মহকুমা শাসক বলেন, আমি যেটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছি আদিবাসীরা সরকারি প্রকল্পগুলি সম্বন্ধে সেভাবে সচেতন নন। তাই কোনও সুবিধের জন্য তাঁরা অফিসে আসেন না। তাদের কাছেই সরকারি অফিসকে পৌঁছে যেতে হয়। আমি সেটা করারই চেষ্টা করেছি।
 অসীমবাবু বদলি হয়ে সল্টলেকে রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি হয়ে চলে যাচ্ছেন। নতুন মহকুমা শাসক হয়ে আসছেন সৌভিক চট্টোপাধ্যায়। আগামী কাল শুক্রবার অসীমবাবু ঘাটাল থেকে চলে যাচ্ছেন শুনেই আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুষ্পবৃষ্টি, ধামসা-মাদোল আর আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে তাঁকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মহকুমা শাসকের অফিস চত্বরে উপস্থিত ছিলেন হাজার-দেড়েক মানুষ। বিদায়ের সময় সবাই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। বিদায়ী মহকুমা শাসক বলেন, ঘাটাল থেকে বিশেষ এক অনুভূতি নিয়ে গেলাম। যা আমার কাজ করার উৎসাহকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। 

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!

‘স্থানীয় সংবাদ’ •ঘাটাল •পশ্চিম মেদিনীপুর-৭২১২১২ •ইমেল: [email protected] •হোয়াটসঅ্যাপ: 9933998177/9732738015/9932953367/ 9434243732 আমাদের এই নিউজ পোর্টালটি ছাড়াও ‘স্থানীয় সংবাদ’ নামে একটি সংবাদপত্র, MyGhatal মোবাইল অ্যাপ এবং https://www.youtube.com/SthaniyaSambad ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।